মাধ্যমিক পরীক্ষা একজন শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। নবম শ্রেণী উত্তীর্ণ করার পরেই একজন শিক্ষার্থীর সমস্ত চিন্তাভাবনা আবর্তিত হয় এই মাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই। শুধু পরীক্ষার্থীরা নয় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেসঙ্গে অবিভাবকদেরও চিন্তাভাবনা আবর্তিত হয় এই মাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে।
কারণ মাধ্যমিক পরীক্ষায় হল একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনের প্রথম সোপান। একজন শিক্ষার্থী যখন নবম শ্রেণী উত্তীর্ণ করে দশম শ্রেণীতে পদার্পণ করে তখন থেকেই তার সমস্ত ফোকাস থাকে মাধ্যমিক পরীক্ষার দিকে। তাই বলা বাহুল্য একজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি এমন ভাবে নেওয়া প্রয়োজন যা তাকে জীবনের সফলতম উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
আমরা জানি যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রতিবছর প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে থাকে। এই সাত থেকে আট লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই কিন্তু সফলতা অর্জন করতে পারেনি। আমরা জানি বহু পরীক্ষার্থী অসফল হয়। কিছু পরীক্ষার্থী মাঝারি মানের রেজাল্ট করে নিজের জীবনকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। তবে হ্যাঁ অবশ্যই কিছু পরীক্ষার্থী দুর্দান্ত রেজাল্ট করে তাদের জীবনকে তথা ভবিষ্যতকে প্রতিষ্ঠিত করে।
বলা বাহুল্য এই কিছু সংখ্যক সফল পরীক্ষার্থীদের সফলতার পেছনে তাদের অধ্যাবসায়, পরিশ্রম ও কিছু কৌশল থাকে। একজন সাধারণ পরীক্ষার্থীও যদি কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের সঙ্গে সঙ্গে এই কৌশলগুলি অবলম্বন করে তাহলে সে নিজেও একজন সফল পরীক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারবে। আজকের এই প্রতিবেদনে একজন পরীক্ষার্থী কিভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১০০% নম্বর পেতে পারে তার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা ও উপায়গুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
এই উপায় তথা কৌশলগুলি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছে। যা একজন নিম্ন মেধার বা মাঝারি মেধার ছাত্র-ছাত্রীও সহজ ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার উপায় বা কৌশলগুলি আলোচনা করার আগে সমস্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে MadhyamikExam.Com এর পক্ষে থেকে Madhyamik Bengali Suggestion 2024 বা মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৪, Madhyamik Geography Suggestion 2024 বা মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২৪ এবং Madhyamik History Suggestion 2024 বা মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৪ বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা যদি এই সমস্ত সাজেশনগুলি সঠিকভাবে করে যায় তাহলে এই সমস্ত বিষয়গুলিতে ১০০ শতাংশ কমন প্রায় নিশ্চিত।
Table of Contents
সিলেবাস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা:
পড়ুয়াদের নবম শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়ে দশম শ্রেণীতে ভর্তির সঙ্গে সঙ্গেই দশম শ্রেণীর সিলেবাস তথা মাধ্যমিকের সিলেবাস সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা প্রয়োজন। মাধ্যমিক পরীক্ষা মোট সাতটি বিষয়ের উপর হয়ে থাকে। যেমন বাংলা, ইংরেজি, অংক, জীবন বিজ্ঞান ভৌত বিজ্ঞান, ইতিহাস ও ভূগোল।
একজন পড়ুয়ার এই প্রতিটি বিষয়ের সিলেবাস খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়া প্রয়োজন। প্রতিটি বিষয়ের সিলেবাস পাঠ্যপুস্তকের প্রথমেই দেওয়া থাকে। বিষয়ভিত্তিক পড়াশুনা শুরু করার আগেই সিলেবাস সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা খুবই প্রয়োজন।
পরীক্ষার প্যাটার্ন বা ধাঁচ সম্পর্কে ধারণা:
মাধ্যমিক পরীক্ষার প্যাটার্ন বা ধাঁচ সম্পর্কে পড়ুয়া তথা পরীক্ষার্থীদের সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। বাংলা, ইংরেজি, অংক, ভৌত বিজ্ঞান, জীবন বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল এই যে সাতটি বিষয়ের উপর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে থাকে এতে প্রতিটি বিষয়ের মোট ৯০ নাম্বার করে লিখিত পরীক্ষা হয়।
এক্ষেত্রে মোট নাম্বার হল ৭×৯০= ৬৩০। প্রতিটি বিষয়তে প্রোজেক্ট থাকে ১০ নম্বর করে অর্থাৎ প্রোজেক্টের মোট নম্বর হল ৭×১০=৭০। সর্বমোট মোট নাম্বার হল (৬৩০+৭০) = ৭০০। এই ৭০০ নম্বরের ওপরেই মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে থাকে।
পাঠ্যপুস্তক ও রেফারেন্স বই নির্বাচন:
মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পেতে গেলে পাঠ্যপুস্তক ও রেফারেন্স বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে ধ্যান দেওয়া প্রয়োজন। একজন শিক্ষার্থী যখন নবম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয় তখন তার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক নির্বাচনের সম্যক ধারণা থাকে না।
সে ভুল পাঠ্যপুস্তক ও রেফারেন্স বই নির্বাচন করে ফেলে এবং মাধ্যমিকে খারাপ রেজাল্ট করে। বিজ্ঞাপনে প্ররোচিত না হয়ে বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞ শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে রেফারেন্স বই নির্বাচন করা উচিত।
সঠিক রুটিন তৈরি:
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে চলার পথে যেমন সঠিক রুটিন এর প্রয়োজন ঠিক তেমনি মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার জন্য একটি সঠিক রুটিনের প্রয়োজন হয়। সঠিক রুটিন বলতে স্কুল সময় বাদ দিয়ে বাকি যেটুকু সময় পড়ে থাকে সেই সময়টুকুকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য একটি প্ল্যান তৈরি করা।
সকাল, দুপুর, বিকেল ও রাত এই সময়গুলিতে কোন বিষয় কখন পড়বে তার টাইমটেবিল তৈরি করে পড়ার টেবিলের পাশে সেটে রাখলে এবং সেই টাইমটেবিল মতো পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট হতে বাধ্য। এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন টাইম টেবিলটি নিজের সুবিধা মতো তৈরি করা উচিত, অভিভাবক বা প্রাইভেট টিউটরের পরামর্শমতো করলে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। তাই নিজের কোন সময় কোন বিষয় পড়তে ভালো লাগে সেই অনুযায়ী টাইম টেবিলটি তৈরি করা উচিত।
প্রাইভেট টিউটর নির্বাচন:
আমরা সর্বদা একটা কথা বলে থাকি “অভিজ্ঞতার দাম আছে” অর্থাৎ অভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরাই আমাদের কাজে আসে। তাই একজন প্রাইভেট টিউটর বা গৃহ শিক্ষক নির্বাচন করার সময় পরীক্ষার্থী তথা অভিভাবকদের অভিজ্ঞ শিক্ষককেই নির্বাচন করা উচিত।
তবে হ্যাঁ ধ্যান দিতে হবে অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে মেধা এবং পড়ানোর দক্ষতা সেই শিক্ষকের আছে কিনা তা জানা প্রয়োজন। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নিয়ে এবং সঠিক লোকেদের সঙ্গে পরামর্শ করে গৃহ শিক্ষক বা প্রাইভেট টিউটর নির্বাচন করা উচিত।